ক্ষণস্থায়ী ফুল শিউলি
ক্ষণস্থায়ী ফুল শিউলি
স্থানীয় অন্য নাম : শেফালি। বৈজ্ঞানিক নাম : Nyctanthes arbor-tristis। ফুল ফোটার মৌসুম : শরৎকাল।
জন্মস্থান : বাংলাদেশ-ভারত। বিস্তৃতি : ঢাকায় রমনা পার্ক, শিশু একাডেমিবাংলা একাডেমি, জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণসহ প্রায় সারা দেশে শিউলি আমাদের প্রকৃতিতে শরৎ ঋতুর অনন্য উপহার হয়ে আসে। এদের আরেক নাম শেফালি। শিউলি ছাড়া শরৎ যেমন নিষ্প্রাণ, তেমনি শারদীয় উৎসবও অনেকটাই অসম্পূর্ণ। মিষ্টি শিশিরের পরশ, ঢাকের শব্দ আর ভোরের শিউলিতলা- এ সবই একে অন্যের পরিপূরক। গ্রাম কিংবা শহরে শিউলি এখনও দুর্লভ হয়ে ওঠেনি। ঢাকার বিভিন্ন পার্ক উদ্যান এবং বাড়ির আঙিনায় সহজেই এ গাছের দেখা মেলে। তবে গাছের আয়ু সীমিত সময়ের। শিউলি এ অঞ্চলের অনেক পুরনো ফুল। মহাকবি কালিদাস থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল এবং বিভূতিভূষণসহ অনেক কবি-সাহিত্যিক শিউলি ফুল নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন। শিউলি মাঝারি আকারের গাছ। সাধারণত ৫ থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। কচি ডাল চৌকা ধরনের। পাতা প্রায় ১০ সেন্টিমিটার লম্বা, আগা চোখা, কিনারায় কখনও সামান্য কাঁটা কাঁটা থাকে। খসখসে পাতাগুলো ডালের দু’পাশে বিপ্রতীপভাবে বিন্যস্ত। শীত ও বসন্তে অনেক পাতা ঝরে। ফুল সুগন্ধি, সাধারণত ২ সেন্টিমিটার লম্বা ও ৩ সেন্টিমিটার চওড়া। ১ সেন্টিমিটার লম্বা সোনালি লাল বোঁটার আগায় সাদা পাপড়ির ৫ থেকে ৮টি লতি থাকে। প্রাচীনকালে ফুলের বোঁটার রঙ পায়েস ও বিভিন্ন মিষ্টান্নে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়া শিউলির মালা খোঁপার সৌন্দর্য বাড়াতেও অনন্য। এই ফুল সন্ধ্যার আবছা অন্ধকারেই ফুটতে শুরু করে, আবার সূর্য ওঠার আগেই ঝরে পড়ে গাছতলায়। ফুল চ্যাপ্টা ধরনের। শিউলির পাতা ও বাকল বিভিন্ন রোগের মহৌষধ।
Post a Comment