প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা প্রস্তুতিঃ বাংলাঃ হাতি আর শিয়ালের গল্প
প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা প্রস্তুতি
হাতি আর শিয়ালের গল্প
উত্তর: মিলেমিশে থাকা মানে সুখে-শান্তিতে বসবাস করা। আদিকালে মানুষ যখন বিচ্ছিন্নভাবে থাকত, তখন নানা ধরনের বিপদের মুখোমুখি হতে হতো। তারপর মানুষ যখন একটু একটু করে সভ্য হচ্ছে, তখন তারা ভাবল বিচ্ছিন্নভাবে নয়, দলগত, সমাজবদ্ধ ও গোষ্ঠীগতভাবে একতাবদ্ধ হয়ে থাকলে অনেক বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই ভাবনা থেকেই মানুষের মধ্যে মিলেমিশে থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল।
প্রশ্ন: সবাই মিলে শিয়ালকে দায়িত্ব দিল কেন?
উত্তর: বন্য প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান হলো শিয়াল। কৌশল ও চালাকির জন্য শিয়াল বনের সব পশুর কাছে সমাদৃত। তাই সবাই মিলে শিয়ালকে দায়িত্ব দিল হাতিকে শাস্তি দেওয়ার জন্য।
প্রশ্ন: অহংকারী ও অত্যাচারীর পরিণাম শেষ পর্যন্ত কী হয়?
উত্তর: বলা হয়ে থাকে ‘অহংকার পতনের মূল’। অত্যাচারীর পরিণামও হয়ে থাকে ভয়াবহ। অহংকারী ও অত্যাচারীকে কেউ পছন্দ করে না। তার বিপদে কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসে না। ‘হাতি আর শিয়ালের গল্প’ থেকে এ কথাগুলো আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। গল্পের হাতিটা ছিল বিশাল দেহের অধিকারী। শক্তিও ছিল প্রচণ্ড। এই শরীর আর শক্তি নিয়ে তার যত অহংকার। বনের পশুদের ওপর তার অত্যচারও ছিল নজিরবিহীন। নিরীহ প্রাণীদের শুঁড়ে জড়িয়ে দূরে ছুড়ে ফেলা কিংবা পায়ের তলায় পিষে ফেলা তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ ছিল। অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে বনের সব প্রাণী। একসময় বনের পশুরা এই অত্যাচারের প্রতিকার করার জন্য পরামর্শ করে। সিদ্ধান্ত অনুসারে শিয়াল কৌশলে হাতিকে নদীতে ডুবিয়ে শাস্তি দেয়। কাজেই বলা যায়, অহংকারী ও অত্যাচারী সাময়িক সুবিধা ভোগ করলেও শেষ পর্যন্ত তার পরিণাম হয় ভয়াবহ।
প্রশ্ন: অনেক দিন আগে মানুষ কী শিখছিল?
উত্তর: অনেক দিন আগে পরিবেশ এতটা উন্নত ছিল না। সুন্দর সবুজ বন, ঝোপঝাড় আর দিগন্তে ঝুঁকে পড়া নীল আকাশের ছোঁয়ায় পরিবেশ ছিল ভিন্ন রকম আমেজে ভরা। সেই সময়ের দিনগুলোতে বনে বনে ছিল পশুদের রাজত্ব। হাজার রকমের প্রাণী আর অসংখ্য পাখপাখালি ভরা ছিল বন-জঙ্গল। লোকালয়ে বসবাসকারী মানুষ তখন একটু একটু করে সভ্য হচ্ছিল আর শিখছিল কী করে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকা যায়, সেসব কায়দা-কানুন।
প্রশ্ন: হাতিটা দেখতে কেমন ছিল?
উত্তর: ‘হিতোপদেশ’ অবলম্বনে রচিত ‘হাতি আর শিয়ালের গল্প’-এর হাতিটা ছিল মস্ত বড়। বিশাল শরীরের ওই হাতিটার পা-গুলো ছিল বটপাকুড়গাছের মতো মোটা। শুঁড় এতটাই লম্বা ছিল যে আকাশের গায়ে গিয়ে ঠেকার মতো। গায়েও ছিল অসীম জোর। শরীর আর শক্তির অহংকারী ওই হাতিটার মেজাজও ছিল দারুণ তিরিক্ষি।
প্রশ্ন: হাতিটা বনে ঢুকে কী ধরনের আচরণ করেছিল?
উত্তর: হাতিটা বনে ঢুকে তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে দেয়। বনে ঢুকে প্রথমেই সে গলা ফাটিয়ে একটা প্রচণ্ড হুংকার দিল। সেই হুংকারে থরথর করে কেঁপে উঠেছিল পুরো বন। শুধু তা-ই নয়, হাতিটা এমন ভাব করতে শুরু করেছিল যেন সে-ই বনের রাজা। পাখি, ইঁদুর, গুবরেপোকার দল এমনকি অমিত শক্তিধর সিংহ এবং থাবা উঁচিয়ে চলা বাঘও হাতিটার এই আচরণে ভয়ে তটস্থ ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।
প্রশ্ন: শিয়াল কীভাবে বনের পশুপাখিকে রক্ষা করল?
উত্তর: হাতির অত্যাচারে বনের সবাই ভীত, তটস্থ ও শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। সিংহ, বাঘ, ভালুক, বানর, হরিণ ও বনবিড়ালের পরামর্শে বুদ্ধিমান শিয়ালকে এই বিষয়ে একটা বিহিত ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী একদিন শিয়াল ভয়ে ভয়ে হাজির হয় হাতির আস্তানায়। হাতির আস্তানায় ঢুকে শিয়াল লেজ গুটিয়ে, হাঁটু মুড়ে প্রথমে হাতিকে সালাম দিল। তারপর বলল, আপনি তো বনের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণী। আপনিই আমাদের রাজা। ওই দেখুন, নদীর ওপারে, সবাই উদ্গ্রীব হয়ে বসে আছে। আপনাকে রাজা হিসেবে বরণ করে নিতে চায় সবাই। তারপর হাতিকে কৌশলে নদীর পানিতে ডুবিয়ে শিয়াল বনের পশুপাখিকে রক্ষা করল।
প্রশ্ন: বিপরীত শব্দগুলো জেনে নিয়ে ফাঁকা ঘরে ঠিক শব্দ বসিয়ে বাক্য তৈরি করো।
সুন্দর কুিসত অহংকার নিরহংকার
ভয় সাহস স্বাধীন পরাধীন
ক. আমরা .......... দেশের অধিবাসী।
খ. .......... পতনের মূল।
গ. চেহারা নয়, আসল .......... হলো মানুষের মন।
ঘ. মনে .......... থাকলে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।
উত্তর: ক। আমরা স্বাধীন দেশের অধিবাসী।
খ. অহংকার পতনের মূল।
গ. চেহারা নয়, আসল সুন্দর হলো মানুষের মন।
ঘ. মনে ভয় থাকলে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়।
Post a Comment